দুধ থেকে তৈরি হলো পোশাক


দুধ থেকে তৈরিকৃত কাপড় 

ফ্যাশন ডিজাইনার  'Anke Domaske'
জার্মানির হ্যানোফারের এক তরুণী ফ্যাশন ডিজাইনার Anke Domaske বাড়ির ফ্রিজে সংরক্ষিত দৈনিক খাবার থেকেই কাপড় তৈরি করেছেন। আর খাবারটি হচ্ছে একটি জনপ্রিয় পানীয় দুধ।- এনএনবি দুধের মধ্যে থাকা প্রোটিনসমূহ ঘনীভূত করে তৈরি করা 
কিউ মিলচ’ ( Qmilch Fabric) নামের এ কাপড়টি কোনো রাসায়নিক ছাড়াই মানুষের হাতে তৈরি বিশ্বের প্রথম তন্তু। কিউ মিলচের উদ্ভাবক ২৮ বছর বয়সী আঙ্কে ডমাস্ক বলেন, এটা রেশমের মতো নরম ও কোনো গন্ধ নেই।
এটা ধোয়াও যাবে অন্য যে কোনো কাপড়ের মতোই। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি কিউ মিলচ শুধু পরিবেশবান্ধবই নয়, এর স্বাস্থ্যগত উপকারিতাও রয়েছে। প্রোটিনে থাকা অ্যামিনো এসিড উপাদানটি ব্যাকটেরিয়া নিরোধক, বার্ধক্য নিরোধক এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে।ডমাস্কের ফ্যাশন লেবেল ম্যাডমোসেল চিচি (এমসিসি) কিউ মিলচ উৎপাদন শুরু করেছে বলে জানান তিনি।এমসিসির বর্তমান পোশাকগুলো বিভিন্ন ধরনের তন্তুর সমন্বয়ে তৈরি কাপড় দিয়ে বানানো হয়। তবে এর কিছু পোশাক সম্পূর্ণ দুধ থেকে তৈরি কাপড় দিয়ে বানানোর পরিকল্পনা করছেন ডমাস্ক। দুধ থেকে তৈরি তন্তু নতুন নয়, ১৯৩০র দশক থেকেই দুধ থেকে তন্তু উৎপাদিত হতো। তবে সেগুলো তৈরি হতো বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহারের মাধ্যমে। কিউ মিলচ সম্পূর্ণ দুধ থেকেই তৈরি হয়। ডমাস্ক জানান, কিউ মিলচ তৈরিতে অত্যন্ত ঘনীভূত ননী এবং কিছু প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা হয়।
প্রথমে গুঁড়ো দুধ থেকে ননী আলাদা করে নিয়ে মাংস কিমা করার যন্ত্রের মতো একটি যন্ত্রের সাহায্যে তাপ প্রয়োগ করে অন্যান্য উপাদানগুলোর সঙ্গে মেশানো হয়, তন্তু বেরিয়ে আসতে শুরু করলে তা অন্য যন্ত্রের সাহায্যে গুটিয়ে নেওয়া হয়। মাত্র ছয় লিটার দুধ থেকে একটি পোশাক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় পুরো কাপড় পাওয়া যায়। এতে ব্যয় হয় দেড়শথেকে দুশইউরো। তবে তরল দুধের মতো এসব পোশাক কখনো মেয়াদোত্তীর্ণ হবে না বলেই জানান ডমাস্ক। তাপ প্রয়োগের সময় এর আণবিক গঠন বদলে গিয়ে এর পচন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাকটেরিয়ারোধী বৈশিষ্ট্য থাকায় দুধজাত এ তন্তু ওষুধ ও প্রসাধনী তৈরিতেও ব্যবহার করা সম্ভব। কিছু গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গাড়ির ভেতরে ব্যবহারের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে এ তন্তু ব্যবহার করছে।