নীল (উদ্ভিদ) |
নীল গুল্ম জাতীয় এক প্রকারের উদ্ভিদ। এর অন্যান্য স্থানীয় নামঃ নিলিনী, রঞ্জনী, গ্রামিনিয়া, কালোকেশী, নীলপুষ্প, মধুপত্রিকা। বৈজ্ঞানিক নামঃ indigofera tinctoria । এটি Fabaceae পরিবারের সদস্য।
পুরাকালে মিশর, গ্রিস ও রোমের লোকেরাও নীলের কথা জানতো। মিশরের ১৮তম রাজবংশের মমিগুলি নীলরং এর কাগজে মোড়া থাকতো।
বাংলা ভূখন্ডে ইন্ডিগোফেরা এর ১৫ প্রজাতির গাছ জন্মে। তার মধ্যে indigofera tinctoria নীল রং এর চাষ করা হতো ভারতে। নীল পানিদে দ্রব্য গুকোসাইড নামক রাসায়নিক হিসাবে থাকে।
নীল রং তৈরির পদ্ধতি নিম্নরূপ - গাছ কেটে বড় কড়াইতে পানির মধ্যে প্রায় ১২ ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখলে তা থেকে সবুজ রং এর নির্যাস রের হয়। এরপর এই নির্যাস নতুন পাত্রে ঢেলে এই দ্রবনকে কাঠি দিয়ে অনেক্ষন নাড়তে হয় যাতে নী বাতাসের অক্সিজেন এর সংস্পর্শে আসে। এর ফলে অদ্রাব্য নীল এর তলানী নীচে জমা হয় এবং পড়ে তা পৃথক করে শুকিয়ে টুকরো টুকরো করে কাটা হয়। ইন্ডিগোটিন ছাড়া তাতে অন্যান্য পদার্থ থাকে তার মধ্যে ইন্ডিরুবাইনম ইন্ডিগো গ্রীন ও ইন্ডিগো ব্রাউন।
এই গাছের ভেষজগুনও বিদ্যমান। প্রাচীন ভারতে অয়ুর্বেদ শাস্ত্রে নীলে আছে প্রশস্তি। আধুনিক কবিরাজি চিকিৎসায় নীলে শিকড় ও পাতার নানা অসুখে ব্যবহৃত হয়। পাতার রস মৃগীরোগীর জন্য উপকারী।
এই উপমহাদেশের মাটি নীল চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী হওয়ায় বৃটিশ নীল করেরা বিপুল পুঁজি বিনিয়োগ করে নীলচাষে। নদীয়া, যশোর, বগুড়া, রংপুর প্রভৃতি জেলায় নীলচাষ ব্যাপক ভাবে করা হতো। উনিশ শতকের শেষের দিকে নীলচাষ অর্থনৈতিক ভাবে লাভজনক না হওয়ায় কৃষকরা ধান ও পাট চাষের দিকে ঝুকে পড়ে। বৃটিশ নীলকরেরা অত্যাচার আর নিপীরনের মাধম্যে নীলচাষে বাধ্য করলে ১৮৫৯-৬০ সালে নীলচাষীরা এর বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলে।
এর পরে বাংলায় নীল চাষ ক্রমে বিলুপ্ত হয়।
( তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ )
No comments:
Post a Comment